২০০৪ সালের কানাডার অটোয়া। একদল তরুণ উদ্যোক্তা অনলাইনে স্নোবোর্ড বিক্রি করার জন্য একটা স্টোর বানাতে চাইলেন। নাম দিলেন Snowdevil। কিন্তু ঝামেলা হলো— সেই সময় অনলাইন স্টোর বানানোর মতো কোনো ভালো সফটওয়্যারই ছিল না। যা পাওয়া যেত, তা ছিল কঠিন, সীমিত আর ব্যবহার করা একেবারেই সহজ না।

এখানেই গল্পে ঢুকলেন একজন জার্মান প্রোগ্রামার, নাম Tobias Lütke। তিনি বললেন, “যেহেতু ভালো টুলস নেই, তাহলে আমি নিজেই একটা বানাই না কেন?”

এই চিন্তা থেকেই জন্ম হলো Shopify-এর।

২০০৬ সালে Shopify অফিসিয়ালি চালু হয়। সহজ ইন্টারফেস, কোড না জানলেও স্টোর খোলার সুযোগ— ব্যবসায়ীরা একে একে Shopify-তে ভিড় জমাতে শুরু করলেন। ছোট ব্যবসা হোক বা নতুন উদ্যোক্তা—সবাই বুঝতে পারল এটা অন্য প্ল্যাটফর্মের থেকে আলাদা।

২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে Shopify অনেকগুলো নতুন সুযোগ নিয়ে আসে—থিম স্টোর, অ্যাপ স্টোর। এখানে ডেভেলপাররা নিজেদের অ্যাপ বানিয়ে বিক্রি করতে পারত। আর ব্যবসায়ীরা পেত নানা ধরনের এক্সট্রা ফিচার। Shopify ধীরে ধীরে শুধু একটা টুল না, বরং একটা ইকোসিস্টেমে পরিণত হলো।

২০১৫ সালে Shopify শেয়ার বাজারে আসে। সেই মুহূর্তে সবাই বুঝতে পারল—এই কোম্পানি শুধু টিকে থাকবে না, বরং বড় কিছু করবে। এরপর থেকে Shopify নিজের পরিষেবা আরও বাড়িয়ে দেয়—Payments, Shipping, Capital। মানে স্টোর খুলবেন, টাকা রিসিভ করবেন, পণ্য পাঠাবেন—সবকিছু Shopify দিয়েই করা সম্ভব।

২০২০ সালে যখন কোভিড এল, মানুষ একের পর এক ফিজিকাল স্টোর বন্ধ করে অনলাইনে চলে এলো। সেই সময় Shopify-এর গ্রোথ একেবারে বিস্ফোরণের মতো বেড়ে গেল। হাজার হাজার নতুন ব্যবসা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে Shopify-তে চলে এলো। অনেক ছোট স্টোর এই প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আবার বাঁচল।

এখন ২০২৫। Shopify আর কোনো সাধারণ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম নয়—এটা এক বিশাল ডিজিটাল অর্থনীতি।

🌍 ৪.৬ মিলিয়নেরও বেশি সক্রিয় স্টোর, ১৭৫টিরও বেশি দেশে।

🤝 ২.৮ মিলিয়ন পার্টনার অ্যাকাউন্ট—ফ্রিল্যান্সার, ডেভেলপার, এজেন্সি।

🇧🇩 বাংলাদেশ থেকেই ৫০,০০০+ পার্টনার অ্যাকাউন্ট।

💰 শুধু ২০২৪ সালেই আয় প্রায় ৭.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

📦 Shopify মার্চেন্টদের মোট বিক্রি ৭০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

একটা স্নোবোর্ড স্টোর থেকে শুরু করে Shopify আজ কোটি কোটি ব্যবসার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার, ডেভেলপার—সবাই এখানে নতুন নতুন সুযোগ খুঁজে পাচ্ছে। Shopify প্রমাণ করেছে, একটা সাধারণ সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে কখনো কখনো পুরো পৃথিবীর ব্যবসার ধারা বদলে যেতে পারে।